সূরা আন নাস বাংলা উচ্চারণ ও তফসির।

সূরা আন-নাস কোরআন মাজিদের ১১৪ নম্বার সূরা। এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৬ টি। সূরা আন-নাস এর বাংলা অর্থ- মানবজাতি। সূরা আন-নাস মাক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। 

নীচে সূরা আন-নাস এর আরবী, বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ দেওয়া হয়েছে। ও এর সঙ্গে সূরা আন-নাস এর আরবী, বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ সহ PDF Download করার লিংক দেওয়া আছে।

সূরা আন নাস বাংলা উচ্চারণ ও তফসির।

সূরা আন নাস আরবি উচ্চারণ। 

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلنَّاسِ
مَلِكِ ٱلنَّاسِ
إِلَٰهِ ٱلنَّاسِ
مِن شَرِّ ٱلْوَسْوَاسِ ٱلْخَنَّاسِ
ٱلَّذِى يُوَسْوِسُ فِى صُدُورِ ٱلنَّاسِ
مِنَ ٱلْجِنَّةِ وَٱلنَّاسِ

সূরা আন নাস বাংলা উচ্চারণ।

কুল আ‘ঊযুবিরাব্বিন্না-ছ,
মালিকিন্না-ছ,
ইলা-হিন্না-ছ।
মিন শাররিল ওয়াছ ওয়া-ছিল খান্না-ছ।
আল্লাযী ইউওয়াছবিছুফী সুদূরিন্নাছ-।
মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-ছ।

সূরা আন নাস অর্থ। 

বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের পালনকর্তার,
মানুষের অধিপতির,
মানুষের মা’বুদের
তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্নগোপন করে,
যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে
জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।

সূরা নাস বাংলা উচ্চারণ ডাউনলোড।

সূরা নাস বাংলা উচ্চারণ থেকে মুখস্থ করতে ইচ্ছুক হলে। নিচে লিংক দেওয়া হয়েছে, ওখান থেকে ডাউনলড করুণ। 


এই সূরা গুলো পড়ুন। 

সূরা আন নাস এর তফসির। 

এ সূরায় মহা মহিমান্বিত আল্লাহর তিনটি গুণ বিবৃত হয়েছে। অর্থাৎ তিনি হলেন পালনকর্তা, শাহানশাহ এবং মা'বুদ বা পূজনীয়। সব কিছু তিনিই সৃষ্টি করেছেন, সবই তার মালিকানাধীন এবং সবাই তার আনুগত্য করছে। তিনি তার প্রিয় নবী (সঃ)-কে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ 

হে নবী (সঃ)! তুমি বলে দাও, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের প্রতিপালকের, মানুষের অধিপতির এবং মানুষের মা'বুদের, পশ্চাদপসরণকারীর অনিষ্ট হতে যে মানুষের অন্তরসমূহে কুমন্ত্রণা ও প্ররোচনা দিয়ে থাকে। চাই সে জ্বিন হোক অথবা মানুষ হোক। 

অর্থাৎ যারা অন্যায় ও খারাপ কাজকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে চোখের সামনে হাজির করে পথভ্রষ্ট এবং বিভ্রান্ত করার কাজে যারা অতুলনীয়। আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই শুধু তাদের অনিষ্ট হতে রক্ষা পেতে পারে।

সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের প্রত্যেকের সাথে একজন করে শয়তান রয়েছে।” সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনার সাথেও কি শয়তান রয়েছে?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “হ্যা আমার সঙ্গেও শয়তান রয়েছে? কিন্তু আল্লাহ তাআলা ঐ শয়তানের মুকাবিলায় আমাকে সাহায্য করেছেন, কাজেই আমি নিরাপদ থাকি। সে আমাকে পুণ্য ও কল্যাণের শিক্ষা দেয়।”

সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর ই'তেকাফে থাকা অবস্থায় উম্মুল মু'মিনীন হযরত সফিয়া (রাঃ) তাঁর সাথে রাতের বেলায় দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি ফিরে যাবার সময় রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)ও তাঁকে এগিয়ে দেয়ার জন্যে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে চলতে থাকেন। 

পথে দু’জন আনসারীর সাথে দেখা হলো। তারা রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)-এর সাথে তাঁর স্ত্রীকে দেখে দ্রুতগতিতে হেঁটে যাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) তাঁদেরকে থামালেন এবং বললেনঃ “জেনে রেখো যে, আমার সাথে যে মহিলাটি রয়েছে এটা আমার স্ত্রী সফিয়া বিনতে হুইয়াই (রাঃ)।

” তখন আনসারী দু’জন বললেনঃ “আল্লাহ্ পবিত্র। হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)। এ কথা আমাদেরকে বলার প্রয়োজনই বা কি ছিল?” রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) উত্তরে বললেনঃ “মানুষের রক্ত। প্রবাহের স্থানে শয়তান ঘোরাফেরা করে থাকে। সুতরাং আমি আশংকা করছিলাম যে, শয়তান তোমাদের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করে দেয় না কি।”