হাদিস গ্রন্থ সম্পর্কে কুরআন কি বলে।

২-২ এই সেই কিতাব (কুরআন), যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত। (অর্থাৎ কুরআনের পরিবর্তে সকল হাদিস গ্রন্থ ও ধর্মীয় গ্রন্থগুলিতে  সন্দেহ আছে আর মুত্তাকীদের জন্য হিদায়েত নয়।)

হাদিস গ্রন্থ সম্পর্কে কুরআন কি বলে।

৬-১৯.২০.২১.২২.২৩.২৪. বল, ‘সাক্ষ্য হিসেবে সবচেয়ে বড় বস্তু কী?’ বল, ‘আল্লাহ সাক্ষী আমার ও তোমাদের মধ্যে। আর এ কুরআন (হাদিস গ্রন্থ নয়) আমার কাছে ওহী করে পাঠানো হয়েছে যেন তোমাদেরকে ও যার কাছে এটা পৌঁছবে তাদেরকে এর (কুরআনের) মাধ্যমে আমি সতর্ক করি।

তোমরাই কি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহর সাথে রয়েছে অন্যান্য উপাস্য? বল, ‘আমি সাক্ষ্য দেই না’। বল, ‘তিনি কেবল এক ইলাহ আর তোমরা যা শরীক কর (হাদিস গ্রন্থগুলি) আমি নিশ্চয়ই তা থেকে মুক্ত’। যাদেরকে আমি কিতাব (কুরআন) দিয়েছি তারা তাকে চিনে যেরূপ চিনে তাদের ছেলে-সন্তানদেরকে।

যারা নিজদের ক্ষতি করেছে তারা ঈমান আনবে না। আর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে যে আল্লাহর উপর (হাদিস গ্রন্থের মাধ্যমে) মিথ্যা রটনা করে অথবা তার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে? নিশ্চয়ই যালিমরা সফলকাম হয় না। 

আর যেদিন আমি তাদের সকলকে সমবেত করব তারপর যারা শির্‌ক করেছে তাদেরকে বলব, ‘তোমাদের শরীকরা (হাদিস গ্রন্থ গুলিরা) কোথায়, যাদেরকে তোমরা (শরীক) মনে করতে?’ তখন তারা এ কথা বলা ছাড়া আর কোন ফিতনা সৃষ্টি করতে পারবে না যে, আমাদের প্রতিপালক আল্লাহর কসম!

আমরা মুশরিক (কুরআনের আয়াতের সঙ্গে হাদিস গ্রন্থগুলি শিরিক কারি)  ছিলাম না। লক্ষ্য কর তারা নিজেদের সম্পর্কে কেমন মিথ্যে কথা বলবে, আর তারা মিথ্যা করে যা (হাদিস গ্রন্থ) উদ্ভাবন করেছিল তা নিস্ফল হয়ে যাবে।

৪৭-২৪.২৫ তবে কি তারা কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা- ভাবনা করে না? নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা রয়েছে? যাদের কাছে সঠিক পথ (কুরআনের পথ) সুস্পষ্ট হওয়ার পর তারা পিছনে ফিরে যায়, শয়ত্বন তাদের জন্য তাদের কাজকে সুন্দর করে দেখায়, আর তাদেরকে দেয় (জান্নাতের) মিথ্যা আশা।

৩১-২০.২১.২২. তোমরা কি দেখ না, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য নিয়োজিত করেছেন আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে। আর তোমাদের প্রতি তাঁর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নিআমত ব্যাপক করে দিয়েছেন; মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক করে (হাদিস গ্রন্থনিয়ে কিন্ত) জ্ঞান, হিদায়াত ও আলো দানকারী কিতাব (কুরআন) ছাড়া। 

তাদেরকে যখন বলা হয়- আল্লাহ যা নাযিল করেছেন (কুরআন) তা অনুসরণ কর, তখন তারা বলে- বরং আমরা তারই অনুসরণ করব আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে যে (হাদিস গ্রন্থগুলির) পথ অনুসরণ করতে দেখেছি। 

শয়ত্বান যদি তাদেরকে জ্বলন্ত আগুনের শাস্তির দিকে ডাকে, তবুও কি (তারা তারই অনুসরণ করবে)? আর যে ব্যক্তি একনিষ্ঠ ও বিশুদ্ধচিত্তে (কুরআনের সাহায্যে) আল্লাহর কাছে নিজকে সমর্পণ করে, সে তো শক্ত রশি আঁকড়ে ধরে। আর সকল বিষয়ের পরিণাম আল্লাহরই কাছে।

২২-৫১.৫২.৫৩.৫৪.৫৫ আর যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করে দেয়ার চেষ্টা করে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী। আর আমি তোমার পূর্বে যে রাসূল কিংবা নবী পাঠিয়েছি, সে যখনই (আয়াত) পাঠ করেছে, শয়তান তার পাঠে (কিছু) নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু শয়তান যা নিক্ষেপ করে আল্লাহ তা মুছে দেন। 

অতঃপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সুদৃঢ় করে দেন। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অতি প্রজ্ঞাময়। এটা এজন্য যে, শয়তান যা (গ্রন্থ) নিক্ষেপ করে, তা যাতে তিনি তাদের জন্য পরীক্ষার বস্ত্ত বানিয়ে দেন, যাদের অন্তরসমূহে ব্যাধি রয়েছে এবং যাদের হৃদয়সমূহ পাষাণ। 

আর নিশ্চয় যালিমরা দুস্তর মতভেদে লিপ্ত রয়েছে। এটা এজন্যও যে, যাদেরকে জ্ঞান (কুরআন) দেয়া হয়েছে, তারা যেন জানতে পারে যে, এটা (কুরআন) অবশ্যই তোমার রবের পক্ষ থেকে সত্য। অতঃপর তারা যেন এর প্রতি ঈমান আনে এবং তাদের অন্তর যেন এর প্রতি অনুগত হয়। 

আর যারা (কুরআনের প্রতি) ঈমান এনেছে, নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে সরল পথ প্রদর্শনকারী। আর যারা কুফরী করে (বলে কুরআনের ব্যাখ্যা হাদিস গ্রন্থ), তারা এতে সন্দেহ পোষণ করতে থাকবে যতক্ষণ না তাদের নিকট আকস্মিকভাবে কিয়ামত এসে পড়বে অথবা তাদের নিকট এসে পড়বে এক বন্ধ্যা দিনের আযাব।

৪৩-৩৬.৩৭ আর যে পরম করুণাময়ের যিকির (কুরআন) থেকে বিমুখ থাকে আমি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করি, ফলে সে হয়ে যায় তার সঙ্গী। আর নিশ্চয় তারাই মানুষদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বাধা দেয়। অথচ মানুষ মনে করে তারা হিদায়াতপ্রাপ্ত।

২-২০৮.২০৯.২১০.২১১ হে মুমিনগণ, তোমরা (কুরআনের মাধ্যমে) ইসলামে পূর্ণরূপে প্রবেশ কর এবং (অনন্য গ্রন্থের মাধ্যমে) শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না । নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য স্পষ্ট শত্রু। অতএব তোমরা যদি পদস্খলিত হও, তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ (কুরআন) আসার পর, তবে জেনে রাখ যে, আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। 

তারা কি এরই অপেক্ষা করছে যে, মেঘের ছায়ায় আল্লাহ ও ফেরেশতাগণ তাদের নিকট আগমন করবেন এবং সব বিষয়ের ফয়সালা করে দেয়া হবে। আর আল্লাহর নিকটই সব বিষয় প্রত্যাবর্তিত হবে।

বনী ইসরাইলকে জিজ্ঞাসা কর, আমি তাদেরকে কত সুস্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছি। আর যে আল্লাহর নি‘আমত (কুরআন) তার কাছে আসার পর তা বদলে (হাদিস গ্রন্থ করে) দেবে তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ আযাব দানে কঠোর।

৩-৭৭.৭৮ নিশ্চয় যারা আল্লাহর অঙ্গীকার ও তাদের শপথের বিনিময়ে খরিদ করে তুচ্ছ মূল্য, পরকালে এদের জন্য কোন অংশ নেই। আর আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং কিয়ামতের দিন তাদের দিকে তাকাবেন না, আর তাদেরকে পবিত্রও করবেন না এবং তাদের জন্যই রয়েছে মর্মন্তুদ আযাব।

তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা নিজদের জিহবা দ্বারা বিকৃত করে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা সেটা কিতাবের (কুরআনের) অংশ মনে কর, অথচ সেটি কিতাবের (কুরআনের) অংশ নয় (হাদিস গ্রন্থের অংশ)। তারা বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, অথচ তা আল্লাহর পক্ষ থেকে নয়। আর তারা আল্লাহর উপর মিথ্যা বলে, অথচ তারা জানে।

৬-৯২.৯৩.৯৪ আর এটি (কুরআন) একটি কিতাব, আমি তা নাযিল করেছি, বরকতময়, যা তাদের সামনে আছে তার সত্যায়নকারী। আর যাতে তুমি সতর্ক কর উম্মুল কুরা (মক্কা) ও তার আশ-পাশে যারা আছে তাদেরকে। আর যারা আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে তারা এ কিতাবের (কুরআনের) প্রতি ঈমান আনে এবং তারা তাদের সালাতের উপর যত্নবান থাকে। 

আর তার চেয়ে বড় যালিম কে, যে আল্লাহর উপর মিথ্যা রটনা করে, অথবা বলে, ‘আমার উপর ওহী প্রেরণ করা হয়েছে’, অথচ তার প্রতি কোন কিছুই প্রেরণ করা হয়নি? এবং যে বলে ‘আমি অচিরেই নাযিল করব, যেরূপ আল্লাহ নাযিল করেছেন’। আর যদি তুমি দেখতে, যখন যালিমরা মৃত্যু কষ্টে থাকে, এমতাবস্থায় ফেরেশতারা তাদের হাত প্রসারিত করে আছে (তারা বলে), ‘তোমাদের জান বের কর। 

আজ তোমাদেরকে প্রতিদান দেয়া হবে লাঞ্ছনার আযাব, কারণ তোমরা আল্লাহর উপর অসত্য বলতে এবং তোমরা তার আয়াতসমূহ সম্পর্কে অহঙ্কার করতে। আর নিশ্চয় তোমরা এসেছ আমার কাছে একা একা, যেরূপ সৃষ্টি করেছি আমি তোমাদেরকে প্রথমবার এবং আমি তোমাদেরকে যা দান করেছি (কুরআন), তা তোমরা ছেড়ে রেখেছ তোমাদের পিঠের পেছনে। 

আর আমি তোমাদের সাথে তোমাদের সুপারিশকারীদের দেখছি না, যাদের তোমরা মনে করেছ যে, নিশ্চয় তারা তোমাদের মধ্যে (আল্লাহর) অংশীদার। অবশ্যই ছিন্ন হয়ে গেছে তোমাদের পরস্পরের সম্পর্ক। আর তোমরা যা ধারণা করতে, (হাদিস গ্রন্থের কথা গুলি) তা তোমাদের থেকে হারিয়ে গিয়েছে।

২-৭৭.৭৮.৭৯.৮০ তারা কি জানে না যে, তারা যা গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে, তা আল্লাহ জানেন? আর তাদের মধ্যে আছে নিরক্ষর, তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া কিতাবের কোন জ্ঞান রাখে না এবং তারা শুধুই ধারণা করে থাকে। সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব (হাদিস গ্রন্থ) লিখে। 

তারপর বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, যাতে তা তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা লিখেছে তার পরিণামে তাদের জন্য ধ্বংস, আর তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস। 

আর তারা বলে,( মোসলমানরা একদিন জান্নাতে যাবে) ‘গোনা-কয়েকদিন ছাড়া আগুন আমাদেরকে কখনো স্পর্শ করবে না’। বল, ‘তোমরা কি আল্লাহর নিকট ওয়াদা নিয়েছ, ফলে আল্লাহ তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করবেন না? নাকি আল্লাহর উপর এমন কিছু (মিথ্যা) বলছ, যা তোমরা জান না’?

৭-২৯.৩০ বল, ‘আমার রব ন্যায়বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন আর তোমরা প্রত্যেক সিজদার সময় তোমাদের চেহারা সোজা রাখবে এবং তাঁরই ইবাদাতের জন্য একনিষ্ঠ হয়ে তাঁকে ডাক’। যেভাবে তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, সেভাবে তোমরা প্রথমে ফিরে আসবে। 

এক দলকে তিনি হিদায়াত (কুরআন) দিয়েছেন এবং আরেক দলের উপর পথভ্রষ্টতা সাব্যস্ত হয়েছে। নিশ্চয় তারা শয়তানদেরকে আল্লাহ ছাড়া (কুরআনকে ছেড়ে অনন্য গ্রন্থকে) অভিভাবকরূপে গ্রহণ করেছে। আর তারা মনে করে যে, নিশ্চয় তারা হিদায়াতপ্রাপ্ত।

১৮-৫৬ আর আমি তো রাসূলদেরকে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই পাঠিয়েছি এবং যারা কুফরী করেছে তারা বাতিল (হাদিস গ্রন্থ) দ্বারা তর্ক করে, যাতে তার মাধ্যমে সত্যকে মিটিয়ে দিতে পারে। আর তারা আমার আয়াতসমূহকে এবং যা দিয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে, তাকে উপহাস হিসেবে গ্রহণ করে।

৪৬-৯ বল, ‘আমি রাসূলদের মধ্যে নতুন নই। আর আমি জানি না আমার ও তোমাদের ব্যাপারে কী করা হবে। আমার প্রতি যা (আল্লাহর কিতাব কুরআন থেকে) ওহী করা হয়, আমি কেবল তারই অনুসরণ করি। আর আমি একজন (কুরআন দ্বারা) সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’।

২৫-৩০ আর রাসূল বলবে, (বিচারের দিন) ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার কওম এ কুরআনকে পরিত্যাজ্য গণ্য করেছে।

আরও পড়ুন- কুরআনের মধ্যে আল্লাহ্‌ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস।

সূচিপত্র দেখুন।