সূরা হুমাযাহ বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ। সূরা হুমাযাহ তাফসীর।
সূরা আল-হুমাযাহ কোরআন মাজিদের ১০৪ নম্বার সূরা। এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৯ টি। সূরা আল-হুমাযাহ এর বাংলা অর্থ- পরনিন্দাকারী। সূরা আল-হুমাযাহ মাক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
নীচে সূরা আল-হুমাযাহ এর আরবী, বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ দেওয়া হয়েছে। ও এর সঙ্গে সূরা আল-হুমাযাহ এর আরবী, বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ সহ PDF Download করার লিংক দেওয়া আছে।
সূরা হুমাযাহ আরবী উচ্চারণ।
وَيْلٌ لِّكُلِّ هُمَزَةٍ لُّمَزَةٍ
ٱلَّذِى جَمَعَ مَالًا وَعَدَّدَهُۥ
يَحْسَبُ أَنَّ مَالَهُۥٓ أَخْلَدَهُۥ
كَلَّا لَيُنۢبَذَنَّ فِى ٱلْحُطَمَةِ
وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا ٱلْحُطَمَةُ
نَارُ ٱللَّهِ ٱلْمُوقَدَةُ
ٱلَّتِى تَطَّلِعُ عَلَى ٱلْأَفْـِٔدَةِ
إِنَّهَا عَلَيْهِم مُّؤْصَدَةٌ
فِى عَمَدٍ مُّمَدَّدَةٍۭ
সূরা হুমাযাহ বাংলা উচ্চারণ।
সূরা হুমাযাহ বাংলা উচ্চারণ দেওয়া হয়েছে।
১) ওয়াইলুলিলকুল্লি হুমাঝাতিল লুমাঝাহ ।
২) আল্লাযী জামা‘আ মা-লাওঁ‘ওয়া ‘আদ্দাদাহ।
৩) ইয়াহছাবুআন্না মা-লাহূআখলাদাহ।
৪) কাল্লা-লাইউমবাযান্না ফিল হুতামাহ।
৫) ওয়ামাআদরা-কা মাল হুতামাহ।
৬) না-রুল্লা-হিল মূকাদাহ
৭) আল্লাতী তাত্তালি‘উ আলাল আফইদাহ।
৮) ইন্নাহা-‘আলাইহিম মু’সাদাহ
৯) ফী ‘আমাদিম মুমাদ্দাদাহ ।
সূরা হুমাযাহ বাংলা অর্থ।
সূরা হুমাযাহ বাংলা অর্থ দেওয়া হয়েছে।
১) প্রত্যেক পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর দুর্ভোগ,
২) যে অর্থ সঞ্চিত করে ও গণনা করে
৩) সে মনে করে যে, তার অর্থ চিরকাল তার সাথে থাকবে!
৪) কখনও না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে পিষ্টকারীর মধ্যে।
৫) আপনি কি জানেন, পিষ্টকারী কি?
৬) এটা আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত অগ্নি,
৭) যা হৃদয় পর্যন্ত পৌছবে।
৮) এতে তাদেরকে বেঁধে দেয়া হবে,
৯) লম্বা লম্বা খুঁটিতে।
সূরা হুমাযাহ বাংলা উচ্চারণ Download.
সূরা আল-হুমাযাহ এর আরবী, বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ ডাউনলোড করার জন্য নীচে লিংক দেওয়া হয়েছে। ওখান থেকে অতি সহজে সূরা আল-হুমাযাহ এর আরবী, বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ সহ PDF Download করতে পারবেন।
সূরা হুমাযাহ mp3 Download.
সূরা হুমাযাহ mp3 Download করুণ। কারণ বাংলা উচ্চারণ থেকে সূরা মুখস্থ করলে শুদ্ধ হয় না। তাই বাংলা উচ্চারণ থেকে মুখস্থ করার পাশাপাশি সূরা হুমাযাহ অডিও শুনুন। এতে সূরা উচ্চারণ শুদ্ধ হবে ও মুখস্থ করাও সহজ হবে। নীচে সূরা হুমাযাহ mp3 Download করার লিংক দেওয়া হয়েছে, ওখান থেকে ডাউনলোড করুণ।
সূরা হুমাযাহ এর তাফসীর।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ চরম দুর্ভোগ রয়েছে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্যে যে অগোচরে অন্যের নিন্দে করে এবং সাক্ষাতে ধিক্কার দেয়। এর বর্ণনা (আরবি) (পশ্চাতে নিন্দাকারী, যে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে বেড়ায়) (৬৮:১১) এ আয়াতের তাফসীরে গত হয়েছে।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এর অর্থ হলো খোটাদানকারী এবং গীবতকারী। রবী ইবনে আনাস (রাঃ) বলেন যে, সামনে মন্দ বলাকে (আরবি) বলা হয় এবং অসাক্ষাতে নিন্দে করাকে (আরবি) বলে। হযরত কাতাদাহ (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হলো মুখের ভাষায় এবং চোখের ইশারায় আল্লাহর বান্দাদেরকে কষ্ট দেয়া।
মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, (আরবি) এর অর্থ হলো হাত এবং (আরবি) চোখ দ্বারা কষ্ট দেয়া এবং এর অর্থ মুখ বা জিহ্বা দ্বারা কষ্ট দেয়া। কেউ কেউ বলেন যে, এর দ্বারা আখফাস ইবনে শুরায়েককে বুঝানো হয়েছে। মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এ আয়াত কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ হয়নি।
এরপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ যে অর্থ জমায় ও তা বারবার গণনা করে। যেমন অন্যত্র রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “যে সম্পদ পুঞ্জীভূত এবং সংরক্ষিত করে রেখেছিল।” হযরত কাব (রঃ) বলেনঃ সারাদিন সে অর্থ সম্পদ উপার্জনের জন্যে নিজেকে নিয়োজিত রাখলো এবং রাত্রে পচা গলা লাশের মত পড়ে রইলো।
আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ সে মনে করে যে, তার ধন সম্পদ তার কাছে চিরকাল থাকবে। কখনো না। অবশ্যই সে নিক্ষিপ্ত হবে হুমায়। হে নবী (সঃ)! তুমি কি জান হুতামাহ কি? তা তুমি জান না। তা হলো আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত হুতাশন। যা হৃদয়কে গ্রাস করবে। জ্বালিয়ে তাদেরকে ভষ্ম করে দিবে, কিন্তু তারা মৃত্যুবরণ করবে না।
হযরত সাবিত বানানী (রঃ) এ আয়াত তিলাওয়াত করে যখন এর অর্থ বর্ণনা করতেন তখন কেঁদে ফেলতেন এবং বলতেনঃ “আল্লাহর আযাব তাদেরকে ভীষণ যন্ত্রণা দিয়েছে।” মুহাম্মদ ইবনে কা'ব (রঃ) বলেনঃ প্রজ্জ্বলিত আগুন কণ্ঠনালী পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তারপর ফিরে আসে, আবার পৌঁছে।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ এ আগুন তাদের উপর আবদ্ধ করে দেয়া হবে সুদীর্ঘ স্তম্ভসমূহের মধ্যে। সূরা বালাদ’ এর তাফসীরেও এ ধরণের বর্ণনা উল্লেখ করা হয়েছে। একটি মারফু হাদীসেও এ রকম বর্ণনা রয়েছে। আগুনের স্তম্ভের মধ্যে লম্বা লম্বা দরজা রয়েছে।
হযরত ইবনে মাসউদের (রাঃ) কিরআত (আরবি) রয়েছে। ঐ সব জাহান্নামীদের স্কন্ধে শিকল বাধা থাকবে। লম্বা লম্বা স্তম্ভের মধ্যে আবদ্ধ করে তাদের উপর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। সেই আগুনের স্তম্ভের মধ্যে তাদেরকে নিকৃষ্ট ধরনের শাস্তি দেয়া হবে। আবু সালিহ (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছেঃ তাদের জন্যে ভারী বেড়ী এবং শিকল থাকবে। তাতে তাদেরকে বন্দী করে দেয়া হবে।
সমস্ত সূরার সম্পূর্ণ তাফসীর পড়ার জন্য এই অ্যাপ ডাউনলোড করুণ... Download.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন