মদ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।

মদ্যপানের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ওপর বিশেষ প্রভাব আছে। পূর্বে মনে করা হত অ্যালকোহল বা মদ একরকম উত্তেজক পদার্থ, তবে এখন বোঝা যায় এতে উত্তেজনার পরিবর্তে ক্রমশ অবসাদ জেগে ওঠে।

প্রথমে মদ্যপান থেকে কম বা বেশিমাত্রায় মদের ওপর মানসিক আসক্তি জাগে। কিন্তু আস্তে আস্তে দৈহিক দিক দিয়ে এর ওপর নির্ভরতা জেগে ওঠে। বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গিতে মদ্যপানকে একটি অসুখ বলে ধরা হয় ও মনে করা হয় মদ পীড়াদায়ক একটি উপাদান। 

মদ থেকে তীব্র মাদকতা জন্মে ও এর ফলে যকৃৎ সিরসিস (liver cirrhosis), সাইকোসিস (Psychosis পাকস্থলী প্রদাহ (Gastritis), অগ্ন্যাশয় প্রদাহ (Pancreatitis), (Cardiomyopathy) ও নিউরোপ্যাথি (Neuropathy) প্রভৃতি অসুখ দেখা যেতে পারে। 

মুখ, ফ্যারিংক্স, ল্যারিংক্স ও গলনালির ক্যানসার সৃষ্টির সঙ্গে মদের সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়। তবে মদ্যপান থেকে নানাভাবে যে অসুবিধা দেখা দেয় তা নীচে দেওয়া হল।

মদ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।

মদ খাওয়াই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অপকারিতা।

১) পাচনতন্ত্রজনিত অসুবিধা- ক) যকৃৎ সিরোসিস, যকৃৎ কোশ ক্যানসার, হেপাটাইটিস, ফ্যাটসমৃদ্ধ যকৃৎ ও যকৃৎ অকর্মণ্যতা। খ) পাকস্থলী প্রদাহ, পেপটিক আলসার, পাকস্থলী ও গলনালির ক্যানসার, গলনালি প্রদাহ। 

২) কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে অসুবিধা- ক) পরিফেরাল নিউরোপ্যাথি। খ) রাম ফিট—এতে মৃগীর মতো খিচুনী ও মূছা দেখা দেয়। গ) মোহাচ্ছন্নতা। ঘ) স্মৃতিভ্রষ্টতা। ঙ) মস্তিষ্কে ক্ষয়। চ) আত্মহত্যা। ছ) দেহের ভারসাম্য রক্ষায় অক্ষমতা। 

৩) অন্যান্য- ক) হাইপোগ্লাইসেমিয়া, কিটোঅ্যাসিডোসিস। খ) অপুষ্টি, পেলো ও হূৎপিণ্ড বেরিবেরি। গ) যৌন অক্ষমতা, অনাক্রম্যতা দোষ। ঘ) রক্তাল্পতা থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া, আয়ুষ্কাল হ্রাস ইত্যাদি।

মদ খাওয়াই সামাজিক অপকারিতা।

১) পথ-দুর্ঘটনা, শিল্প-দুর্ঘটনা। ২) বিবাহিত জীবনে অশান্তি। ৩) বিবাহবিচ্ছেদ। ৪) আর্থিক দরিদ্রতা। ৫) ওষুধের ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধি। ৬) পেশাগত অশান্তি ও কর্মে অবনতি। ৭) দুর্নীতিমূলক কাজ, হঠকারিতা ইত্যাদি।

মদ খাওয়া ছাড়ানোর উপায়।

মাদকাসক্তি দুর করার জন্য চিকিৎসা (Treatment for alcohol addiction) - যেসব লোক নিয়মিত মদ খায়, তাদের মধ্যে মদে আসক্তি জন্মায়। হঠাৎ করে মদ খাওয়া বন্ধ করলে মদ ছাড়ার সিন্ড্রোম দেখা দেয়। 

তখন মানুষের মধ্যে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায় তা হল খিটখিটে মেজাজ, নিদ্রাহীনতা, উদবেগ, দুর্বলতা ও বমি প্রভৃতি। এসব লক্ষণ দূর করার জন্য এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। 

ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। এই চিকিৎসাকে বলে ডিটক্সিফিকেশন (Detoxification)। এরপর কিছু মানসিক ও ব্যবহারগত পরিচর্যা করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন।