দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার দোয়া।

বিসমিল্লাহ্‌।। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষ দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন পথ অবলম্বন করছে। কেউ কেউ আবার দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য দুয়ার খোঁজ করছে।

কিন্ত দাজ্জালের ফিতনা এতো ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, যে সাধারণ মানুষের এই ফিতনা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা প্রাই অসম্ভব।

তাই বর্তমান সময়ে দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজন একটি মোজেজা। কিন্ত মোজেজা হবে কিভাবে? আমরাতো মনে করি নবী ও রসূলের মাধ্যমে হয় মোজেজা আর বর্তমান সময়ে নবী ও রসূল আসবে না। তাহলে মোজেজাও হবে না।

তবে হতাশ হওয়ার কোন বিষয় নেই। কারণ এই আর্টিকেলর মাধ্যমে আপনাকে কয়েকটি মোজেজা দেখানোর চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ।।

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজন একটি মোজেজা।

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজন মোজেজা।

দাজ্জালের ফিতনাতে পড়ে আছে মুসলিম জাতি, অর্থাৎ আমরা। জেহুতু মুসলিম জাতি দাজ্জালের ফিতনায় পড়ে আছে, তাই আমরা মুসলিম জাতি কি বুঝার চেষ্টা করবো। মুসলিম কথার অর্থ- আত্মসমর্পণ।

একজন আত্মসমর্পণকরীকে আরবিতে মুসলিম বলা হয়। তাই মুসলিম হওয়ার প্রথম শর্ত নিজেকে আত্মসমর্পণ করা। এখন প্রশ্ন কিভাবে নিজেকে আত্মসমর্পণ করবো। ২ নম্বর সূরা আল-বাকারা ১৩৬ নম্বর আয়াতটি দেখে নেওয়া হক...

"তোমরা বল, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের উপর ও যা নাযিল করা হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর আর যা প্রদান করা হয়েছে মূসা ও ঈসাকে এবং যা প্রদান করা হয়েছে তাদের রবের পক্ষ হতে নবীগণকে। আমরা তাদের কারো মধ্যে তারতম্য করি না। আর আমরা তার জন্য মুসলিম (অনুগত)’।"

এই আয়াতে বিষয়টি পরিষ্কার যে আয়াত গুলো নাযিল করা হয়েছে ওই আয়াত গুলোর প্রতি বিশ্বাস করে মেনে নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার মাধ্যমে মুসলিম হওয়া সম্ভব। কিন্ত আমাদের সমস্যা হল কুরআনের আয়াতের প্রতি ঈমান আনার পাশাপাশি কুরআনের বাইরেও ঈমান এনেছি। যাকে বলা হয় শরীক করা।

চলুন ১২ নম্বর সূরা ইউনুস আয়াত নম্বর ১০৬ এ কি বলা হয়েছে দেখি... "তাদের অধিকাংশ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে, তবে  শিরক করা অবস্থায়।"

এই আয়াতে বলা হয়েছে যে অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে কিন্ত শিরক করা অবস্থায়। এই কথা গুলো বলার কারণ হল- আমাদেরকে কুরআনের প্রতি বিশ্বাস করতে হবে, নাকি মানুষের লিখা গ্রন্থের প্রতি?

২ নম্বর সূরা আল-বাকারা ৭৯ নম্বর আয়াতটি দেখে নেওয়া হক... "সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব লিখে। তারপর বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, যাতে তা তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা লিখেছে তার পরিণামে তাদের জন্য ধ্বংস, আর তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস।"

দেখুন এই আয়াতে অভিশাপ দেওয়া হয়েছে ওদেরকে- যারা আল্লাহর কিতাবের উপর কিতাব লিখে। আর আল্লাহ যা নাযিল করেনি তা ব্যাখ্যা করে আর বলে এ গুলো সব আল্লাহর পক্ষ থেকে।

তাই আপনি যদি আল্লাহর কিতাব আল-কুরআন মানার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ যা নাযিল করেনি তার প্রতি বিশ্বাস আনেন। তাহলে এই প্রক্রয়াকে কুরআনের ভাষায় শিরক বলা হয়েছে।

সব সময় আল-কুরআন একটি মোজেজা।

আসুন কুরআনের মোজেজার মাধ্যমে দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্তি লাভ করার চেষ্টা করি। দাজ্জালের ফিতনা সহ আমরা আরও দুটি ফিতনার সঙ্গে জড়িত আছি (১) ইমাম মেহেদি আর (২) ঈসা (আঃ)।

আপনি যদি কুরআন পড়েন তাহলে আশ্চর্য হয়ে দেখবেন যে- কুরআনের মধ্যে দাজ্জাল ও ইমাম মেহেদির কোন প্রসঙ্গ নেই। আল্লাহ যা নাযিল করেননি তা নিয়ে খামখা আমাদের মাথা ব্যথা।

মুসলিম হওয়ার জন্য কুরআনের আয়াতের প্রতি ঈমান নিয়ে আনতে হবে, কিন্ত কুরআনে যে বিষয়ে কোন আলোচনা নেই, তার প্রতি ঈমান নিয়ে আশা ফিতনা নয় তা কি? 

আপনি বিশ্বাস করুণ বা না করুণ, আপনার মৃত্যু হয়ে যাবে কিন্ত দাজ্জাল, ইমাম মেহেদি ও ঈসা (আঃ) আসবে না। পৃথিবী ধংস হয়ে যাবে, বিচার দিন চলে আসবে কিন্ত দাজ্জাল, ইমাম মেহেদি ও ঈসা (আঃ) আসবে না।

৬ নম্বর সূরা আল-আনআম ১২৬ নম্বর আয়াত টি দেখে নেওয়া হক... "আর এ হচ্ছে তোমার রবের সরল পথ। আমি তো বিস্তারিতভাবে আয়াতসমূহ বর্ণনা করেছি এমন কওমের জন্য, যারা উপদেশ গ্রহণ করে।"

এই আয়াতে বলা হয়েছে যারা উপদেশ গ্রহণ করে তাদের জন্য আয়াত সমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, কিন্ত দাজ্জাল ও ইমাম মেহেদি সম্পর্কে বলতে আল্লাহ ভুলে গিয়েছেন। আপনাকে প্রশ্ন করছি এটা কি সম্ভব?

দাজ্জাল, ইমাম মেহেদি আর ঈসা (আঃ) এর আবির্ভাব নিহাত একটি মিথ্যা গল্প ছাড়া আর কিছু না। কারণ এর কোন একটিরও প্রমাণ আল্লাহ নাযিল করেন নি।

যুগে যুগে নবী ও রসুলদেরকে মানুষে কবি, যাদুকর বলে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ তারা কুরআনের উপদেশ গ্রহণ না করার জন্য অজুহাত দেখিয়ে বলতো কবি ও যাদুকর ইত্যাদি।

৬৯ নম্বর সূরা আল-হাকাহ আয়াত ৪০-৪৩ দেওয়া হল... "নিশ্চয়ই এটি এক সম্মানিত রাসূলের বাণী। আর এটি কোন কবির কথা নয়। তোমরা কমই বিশ্বাস কর। আর কোন গণকের কথাও নয়। তোমরা কমই উপদেশ গ্রহণ কর। এটি সৃষ্টিকুলের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত।"

এই কথা গুলো বলার উদ্দেশ্য হল, এখন যে আয়াত আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো ওই আয়াতটি আপনাদের যাদু মনে হবে। আর যাদু মনে হবে এই কথা, ওই আয়াতেই বলা হয়েছে। কিন্ত যাদু মনে হওয়ার পর যদি আপনি ওই আয়াতের প্রতি ঈমান আনেন, তাহলে খুব সহজে দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্তি লাভ করবেন ইনশাল্লাহ।।

চলুন যাদু আরাম্ভ করা হক। আপনারা জানেন যে যাদু দেখানোর আগে ভিল্কি দেখান হয়। তাই এখন কিছু ভিল্কি দেখানো হবে। তার আগে একটি কথা, এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকলে বা কোন মন্তম্ব থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর নতুন আর্টিকেল পেতে টেলিগ্রাম চ্যানেল Join করুণ।

 আমরা সকলে অবগত যে ঈসা (আঃ) আবার পৃথিবীতে আসবে ও দাজ্জাল কে হত্যা করবে। আমি ১০০% বিশ্বাস যে এই কথা আপনি কারও না কারও মুখে শুনেছেন। বা কোন আলেমের মুখে শুনেছেন যে ঈসা (আঃ) আবার আসবে।

দাজ্জাল, ইমাম মেহেদি আর ঈসা (আঃ) সম্পর্কে যে গল্প গুলো শুনি, এই গল্প গুলো মানুষের মুখের কথা। আর এই গল্প গুলো মানুষের মুখে মুখে বেশী প্রচার হয়ে থাকে। এই গল্প গুলো কুরআনের মধ্যে পাবেন না। কারও না কারও মুখে শুনতে পাবেন।

আপনি জানলে অবাক হবেন কুরআনের মধ্যে দাজ্জাল আর ইমাম মেহেদির নাম নেই। এদের নাম কুরআনের মধ্যে খুঁজেও মিলাতে পারবেন না। সুধু মানুষের মুখের কথা। এটা তো সঠিক যে দাজ্জাল ও ইমাম মেহেদির কথা কুরআনে নেই, কিন্ত ঈসা (আঃ) সম্পর্কে বিস্তারত কুরআনে এসেছে।

তাই আমরা কুরআন থেকে একটি আয়াত দেখবো। যে আয়াতটি আপনার যাদু মনে হবে। আমরা বিভিন্ন আলেম উলামা ও মানুষের মুখ থেকে সুসংবাদ শুনেছি যে আবার ঈসা (আঃ) আসবে। কিন্ত আজ আমরা স্বয়ং ঈসা (আঃ) এর মুখ থেকে শুনবো যে ঈসা (আঃ) কি বলে। 

এখন যে আয়াতটি পরিবেষণ করা হবে, যদি এই আয়াতটির যাদু আপনি বুঝতে সক্ষম হন তাহলে চিরতরের মতো দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্তি লাভ করবেন। আর যদি আপনার যাদু মনে হয় তাহলে দুঃখিত। আপনার কুরআনের প্রতি বিশ্বাস আনা প্রয়জন।

নীচে আয়াতটি পরিবেষণ করা হল। ৬১ নম্বর সূরা আস-সফ ৬ নম্বর আয়াত।

"আর যখন মারইয়াম পুত্র ঈসা বলেছিল, ‘হে বনী ইসরাঈল, নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট আল্লাহর রাসূল। আমার পূর্ববর্তী তাওরাতের সত্যায়নকারী এবং একজন রাসূলের সুসংবাদ দিচ্ছি যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম আহমদ’। অতঃপর সে যখন সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বলল, ‘এটাতো স্পষ্ট যাদু’।"

আমরা আলেম উলামাদের মুখে শুনেছি যে ঈসা (আঃ) আসবে। কিন্ত এই আয়াতে ঈসা (আঃ) নিজে মুখে বলছেন যে আমার পরে একজন রসূল আসবে যার নাম হবে আহাম্মদ, আর এটাই যাদু।।