হিন্দু ও ইসলামধর্মের দেবদূত বা ফেরেশতার ধারণা।

ইসলাম ধর্মে ফেরেশতা সম্পর্কে ধারণা। 

নিখিল জগতের প্রতিপালক সর্বশক্তিমান আল্লাহ ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেছেন আলও থেকে। সাধারণত তাঁরা অদৃশ্য। তাঁদের নিজস্ব কোনও স্বাধীন চিন্তা নেই এবং সেজন্যে তাঁরা সর্বদা আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী কাজ করেন। 

যেহেতু তাঁদের স্বাধীন চিন্তা নেই, সেহেতু তাঁরা আল্লাহকে কখনও অমান্য করেন না, অবাধ্যতাও তাঁদের প্রকৃতিতে নেই। ভিন্ন ভিন্ন ফেরেশতাকে আল্লাহপাক ভিন্ন ভিন্ন কাজের জন্য নিযুক্ত করেছেন। যেমন জিবরাইলকে নিযুক্ত করা হয়েছেন আল্লাহর প্রত্যাদেশ নবিদের কাছে বহন করে আনার জন্য।

হিন্দু ও ইসলামধর্মের দেবদূত বা ফেরেশতার ধারণা।

ফেরেশতারা আল্লাহপাকের সৃষ্টি। তাঁদের উপর ভিন্ন ভিন্ন কাজের দায়িত্ব থাকলেও, তাঁরা কিন্তু দেবতা বা ভগবান নয়। মুসলমানরা তাঁদের উপাসনা করে না । মুসলমানরা কেবলমাত্র পরম স্রষ্টা আল্লাহরই উপাসনা করে। সৃষ্টি কখনও সৃষ্টির উপাসনা করতে পারে না—সৃষ্টি স্রষ্টারই উপাসনা করে।

হিন্দুধর্মে দেবদূত সম্পর্কে ধারণা।

হিন্দুধর্মে ফেরেশতার কথা নেই, দেবদূতের ধারণাও সেখানে অনুপস্থিত। হিন্দুরা কিছু অতি শক্তিশালী জীবের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন আর সেই শক্তিশালী সত্তাকে দেবতা হিসেবে পুজো করেন। (হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলিতে সর্বশক্তিমান স্রষ্টার কথা এবং একেশ্বরবাদের কথা থাকলেও বহু দেবতার অনুপ্রবেশে সেখানে কীভাবে ঘটল তা সহজেই অনুমান করা যায়। ইসলামধর্মে আছে, মিকাইল ফেরেস্তার উপর আছে জলের দায়িত্ব—আল্লাহর হুকুমে তিনি জল বণ্টন করেন।

আল্লাহ মিকাইলকে সৃষ্টি করেছেন, তাই এই সৃষ্ট জীব কখনও কোনও সৃষ্টির উপাস্য হতে পারেন না। অন্যদিকে, হিন্দুধর্মে যিনি জলের দায়িত্বে আছেন, তিনি বরুন। তিনি সৃষ্টি না স্রষ্টা—তার ব্যাখ্যা কিন্তু সাধারণ হিন্দুদের কাছে নেই। হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলির মূলে যদি সর্বশক্তিমান এক ও অদ্বিতীয় ঈশ্বরের কথা থাকে, বরুণের তাহলে কী পরিচয়? ঈশ্বর যদি সর্বশক্তিমান হন, তাহলে তিনশ তেত্রিশ কোটি দেবতার কী প্রয়জন ? নাকি ‘দেবতা’ বলতে এখানে ‘দেবদূত’কে বেঝান হয়েছে ?)

ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের সাদৃশ্য - সূচিপত্র।