হিন্দু ধর্মের পরিচয়।

হিন্দুধর্ম কথাটি এসেছে 'হিন্দু' শব্দ থেকে। 'New Encyclopedia Britannica' গ্রন্থে (২০ : ৫৮১) আছে-- উনবিংস শতাব্দীর ইংরেজরা সিন্ধুনদের তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষদের ধর্মবিশ্বাসকে 'hinduism' বলে উল্লেখ করেন। 

১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে কোনও কোনও ব্রিটিশ লেখক আবার ভারতে বসবাসকারী মুসলিম, খ্রিস্টান সহ সমস্ত শ্রেণির মানুষকে 'হিন্দু' নামে অভিহিত করেছেন।

হিন্দু পণ্ডিতদের মতে, 'হিন্দুধর্ম' একটি ভুল নাম। 'হিন্দুধর্মের' পরিবর্তে একে 'সনাতন ধর্ম' বা 'বৈদিক ধর্ম' বলা উচিত। স্বামী বিবেকানন্দ একে 'বেদান্ত ধর্ম' নামে অভিহিত করেছেন। 

হিন্দু ধর্মের পরিচয়।

একজন হিন্দু বেক্তির পরিচয়।

'হিন্দু' শব্দটির একটি ভৌগোলিক তাৎপর্য আছে। সাধারণত 'সিন্ধু' নদীর তীরে বা সিন্ধুর পলি বিধৌত অববাহিকায় যে সমস্ত মানুষ বাস করতেন তাঁদের 'হিন্দু' বলা হত।

ঐতিহাসিকদের মতে, যে সমস্ত পারস্য বাসী হিমালয়ের উত্তর-পশ্চিম গিরিপথের মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষে প্রবেশ করেন, তাঁরাই প্রথম 'হিন্দু' শব্দটি ব্যবহার করেন। আরবরাও 'সিন্ধু'র প্রতিশব্দ হিসাবে 'হিন্দু' ব্যবহার করতেন।

Encyclopedia fo Religions and Ethics (৬ : ৬৯০)- এ আছে, ভারতবর্ষে মুসলিমদের আগমনেরআগে কোন ভারতীয় সাহিত্যে বা ভারতীয় ধর্মগ্রন্থে 'হিন্দু' ব্যবহিত হয়নি।

জহরলাল নেহরু তাঁর 'Discovery of India' গ্রন্থে (পৃ- ৭৪-৭৫) লিখেছেন যে, অষ্টম শতাব্দীর এক তান্ত্রিক গ্রন্থে সর্বপ্রথম 'হিন্দু' শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায়। অবশ্য সেখানে কোন এক বিশেষ ধর্মের অনুসরণকারীদের 'হিন্দু' বলা হয়নি, বরং এক ভুগোলিক জনগোষ্ঠীকে 'হিন্দু' বলা হয়েছে। ধর্ম হিসেবে 'হিন্দু' শব্দটির প্রয়োগ অনেকখানি আধুনিক যুগের।

সংক্ষেপে বলা যায়, 'হিন্দু' একটি ভৌগোলিক শব্দ। 'সিন্ধু' নদীর তীরে যারা বসবাস করতেন অথবা (বৃহত্তর অর্থে) যারা ভারতবর্ষে বসবাস করতেন তাঁদের 'হিন্দু' বলা হত।

ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের সাদৃশ্য - সূচিপত্র।